How to sell without selling your soul

ডিএসবি'র হোমওয়ার্ক

চলুন সেল করা শিখি

আজকের এই আর্টিকেল টি তে আমরা সেল করা ই শিখবো কিন্তু সেল করবো, সেল নাই, সেল করতে চাই এসব বলে বলে সেল না।। এভাবে না বললে কি সেল হয়? অবশ্যই হয় তা ই জানবো আজ।

আচ্ছা SELL কে ভেংগে ভেংগে চিন্তা করেছেন কখনো?

S= sencerity
E= encourage
L= listening
L= love

এই ৪ টা জিনিস কে একত্র করে নিজের ভেতর গুছিয়ে নিন, পরে বিক্রির চিন্তা। দেখবেন এই ৪ জিনিসের সুন্দর সমন্বয় করতে পারলে বিক্রি র কথা ভাবতে ই হচ্ছে না। বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

ইয়েস, ইটস ট্রু…

দেখছিলাম স্টীভ হ্যারিসন এর একটি ভিডিও,
How to sell without selling your soul…

স্টীভ হ্যারিসন বিশ্বের সেরা মার্কেটিং এক্সপার্ট দের একজন এবং তিনি ও তার টীম মিলে মার্কেটিং এর উপর বিভিন্ন ট্রেইনীং দিয়ে থাকেন। এই ১৭ মিনিট ১০ সেকেন্ড এর ভিডিও টি ও আমাদের জন্য একটা ট্রেইনিং লেসন এর থেকে কম কিছুই না।

শুরুতে ই তিনি বলেন তার জীবনের প্রথম সেল এর অভিজ্ঞতার কথা। যা ছিলো তার কলেজ কালীন সময়ে। তখন গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় তার শিক্ষক রব তাকে একটি চাকরীর কথা বলেন। স্টীভ তার সেই শিক্ষক কে খুব সন্মান করতেন, তার কথা মত চলে যান ইন্টারভিউ দিতে। বেশ ভালো স্যালারী র জব হলে ও তিনি ইন্টারভিউতে গিয়ে বুঝতে পারেন এটা একটা সেলম্যান এর জব এবং তাকে বাচ্চাদের বই বিক্রি করতে হবে। তিনি সাইন আপ করেন।

কিন্তু তার বাবা ছিলেন একজন কর্পোরেট, তার ছেলে বই বিক্রি করবে বা পারবে এসব ই তার মাথায় ঢুকলো না৷ খুব বিরক্ত হলেন তিনি। বিক্রি করা ছাড়া আর কোন কাজ নেই, বই বিক্রি কেন৷ এ চাকরী কেন।

সব উপেক্ষা করে সেই দিন ঘনিয়ে আসলো, সকাল ৭ টা ৪২ মিনিটে সে গাড়িতে উঠলো৷ যেখান থেকে তিনি শুরু করবেন তার বিক্রি করা। তিনি অনেক বেশি ঘাবড়ে গেলেন, ভয় পেয়ে গেলেন, মনে হলো যেন ঘামছেন, পা কাপছে, গাড়ি থেকে নামতেই পারবেন না এমন কিন্তু রব তাকে বললেন, যে বিক্রি টা কে বিক্রি হিসেবে না৷ ভালোবাসা হিসেবে নিতে, দায়িত্ব হিসেবে নিতে। যার দরজায় কড়া নাড়বে তাকে তুমি কিছু বিক্রি করতে যাচ্ছো না৷ বরং কিছু সময় নিচ্ছো তার কাছে, তাকে উৎসাহিত করতে, তাকে কিছু ভালো সময় উপহার দিতে। এই ভেবে যাও। হ্যা আমাদের সকলের কাছে কিছু না কিছু আছে, আমরা চাইলে তা অন্যের কাছে বিক্রি করতে পারি বা অন্যকে মোটিভেট করতে পারি ইউজ করতে / নিজের কাছে নিতে কিন্তু আমরা অন্যকে মোটিভেট করতে ভয় পাই, পারিনা বা উদ্দেশ্য টা ই ঠিক থাকেনা।
আমাদের নিজেদের প্রিপেয়ার করা প্রয়োজন।

এরপর সে গাড়ি থেকে নামলেন, কড়া নাড়লেন দরজায়। কে বের হবে, কি ভাববে সহজভাবে নিবেতো, ভালো কিছু হবেতো, বিরক্ত হবে না তো…..

সব চিন্তার অবসান ঘটিয়ে একজন ভদ্র মহিলা বের হলেন, এবং দেখে ই বুঝা যাচ্ছে তিনি খুব ই বিরক্ত৷ ভ্রু কুচকে আছেন।।। মনে ভয় , আশংকা অনেক কিছু, স্টীভ এর মনে হচ্ছিলো তার মুখ দিয়ে কথা ই বের হবেনা। এরপর তিনি যা করলেন তা খুব ই অবাক হওয়ার মত৷ তিনি বাচ্চাদের বই বের করে বিভিন্ন আংগিকে তা পড়তে শুরু করলেন। মহিলা বললেন কিসে পে করবে মাস্টারকার্ড এ নাকি চেক এ ?

এটা ই ছিলো স্টিভ এর জীবন এর প্রথম সেল এর অভিজ্ঞতা। এরপর তিনি পুরো ছুটি সেলসম্যান এর এই জব কন্টিনউ করেন এবং অভিজ্ঞতার ঝুলি ভরেন।

তিনি সব সময় ই ভাবেন যে প্রতিটা দরজায় সুযোগ থাকতে পারে। কোন সুযোগ কার জন্য, কে কোন সুযোগ কে কাজে লাগাতে পারে এটি ই ফাইনাল রেজাল্ট এর নির্ধারক। সেল বলি কিংবা মার্কেটিং এমন ই। অনেকেই সেল বলতে ভেবেই নেন নিজের স্বকীয়তা কে বিলীন করে কিছু করা না, ব্যাপার টা কিন্তু তেমন না। ব্যাপার টা উপলব্ধীর, ভালো কিছু সময়ের উপলব্ধী।

তিনি সেল কে ভেংগে ভেংগে তার রূপ দেন ৪ টা শব্দে যা আমি উপরে ই লিখেছি।

স্টীভ মনে করেন সেল এর প্রথম শর্ত হলো আন্তরিক হতে হবে। কেননা আমরা কাকে সেল করবো, কে আসবে আমাদের কাছে কিংবা আমরা কার দরজায় কড়া নাড়ছি কেউ ই জানিনা, দুই পক্ষই অপরিচিত, তাই আগে আন্তরিক হতে হবে। আমার জন্য যে তার কিছুটা সময় হবে কিনা, কিংবা সেই সময় টা ওয়েস্ট হবে না সেই উপলব্ধী তাকে ফিল করাতে হবে৷ আন্তরিক ভাবে শুরু করতে পারলে পরবর্তী কনভারসেশন অনেক সহজ হয়ে যায়। না সেল টা ই মূখ্য না। তবে কনভারসেশন এর পরে যেন এর রেশ টা পজিটিভ হয় স্টীভ সেটা ই বুঝাতে চেয়েছেন।

এখানে তিনি তার এক ফ্রেন্ড কে উদাহরণ হিসেবে টানেন, যেখানে এলেন ছিলেন খুব উদার, আন্তরিক একজন মানুষ কিন্তু কোথা ও যেন কিছু করতে পারছিলেন না, ভাবের প্রকাশ হচ্ছিলো না তার মাধ্যমে। এই যে সে এতটা আন্তরিক এটা ই মানুষ কে বুঝাতে হবে, তাহলে অবশ্যই যা ই করতে চাই না কেন সেটা খুব সহজ হয়ে যাবে। এলেন এসবের পর নিজেকে নতুন করে তৈরি করে জব এর ইন্টারভিউ দেন, এবং পরবর্তী জব এ সে ভালো করেন।

আসলে সুযোগ তো আছে ই সবার জন্য, শুধু সঠিক পথে সদব্যবহার করা প্রয়োজন।

সেল এর মাঝে পরের যে বৈশিষ্ট্য স্টিভ ব্যাখ্যা করেছেন তা হলো উৎসাহিত করা। অন্যকে উৎসাহিত করা খুউউব ভালো একটা গুণ। কিন্তু এই উৎসাহ টুকু ই কেউ কাউকে দেয়না, দিতে চায়না।

এই জায়গাটা থেকে স্টীভ তার জীবনের আরেকটি বাস্তবসম্মত উদাহরণ দেন। তিনি তখন মাত্র ক্লাস ৯ এর ছাত্র, তখন তার ওজন ছিলো ৯১ পাউন্ড, সেই শরীর নিয়ে তার বিজ্ঞান এর শিক্ষক তার শরীর এর খুব প্রশংসা করলেন এবং বললেন সে চাইলে রেসলিং এ খুব ভালো করবে।।।।  ৯১ পাউন্ড এর একজন কে যদি কেউ বলে রেসলং এর জন্য পার্ফেক্ট বডি, রেসলিং খেললে খুব ভালো করবে, খুব স্বাভাবিক ভাবে সে খুশি হয়ে যাবে। স্টীভ এর বেলায় ও ব্যতিক্রম হলো না, সে খুশিতে রেসলিং ও চলে গেলেন এবং ভালো ও করলেন।

এখনে কিন্তু স্টিভ এর শিক্ষক একজন বিক্রেতা র মত গোপণে তার রেসলিং ট্রেইনিং এর সেবা টি বিক্রি করেছেন। ওটা ও আমাদের জন্য একটা বড় শিক্ষা।।

এরপর  সেল এর সাথে সম্পৃক্ততা থেকে চলে আসে শোনার আগ্রহ, কিছু শুনতে চাওয়ার ইচ্ছা। হ্যা, ভালো সেলার হতে চাইলে অবশ্যই ভালো শ্রোতা হতে হবে৷ অনেকেই মার্কেটিং শব্দ টা শুনলে ই বলে যে ভালো বক্তা হতে হবে। কিন্তু এর থেকে ও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালো একজন শ্রোতা হওয়া। আমরা যার কাছে গিয়েছি, যাকে নক করেছি বা যে আমাদের কাছে এসেছেন এটা খুব বেশি ইফেক্টিভ এ আমরা তাকে কতটা আপন করে নিচ্ছি, তাকে কতটা প্রায়োরিটি দিচ্ছি। আমরা যখন তার কথা য় খুব বেশি আগ্রহী হবো তখন তারা কম্ফোর্ট ফিল করবে,  তারা ভরসার জায়গা খুজে পাবে। এবং ক্রেতা যতটা কম্ফোর্ট জোন এ থাকবে ততটা ই তারা ফ্রি লি আমাদের সাথে তাদের সমস্যা গুলো শেয়ার করবে এবং আমরা তা সমাধানের চেষ্টা করতে পারবো।।।
এবং এর ফলস্বরূপ ক্রেতা ও আগ্রহী হবেন আমাদের দিকে।

একটা সমীক্ষায় দেখা যায় যে,  ১৩% ক্রেতা ও এটা ভাবেনা যে তাদের প্রতি সেলার রা আগ্রহ দেখায়। এই জায়গাটা থেকেই বুঝা যায় কতটা সচেতন হওয়া উচিৎ আমাদের এক্ষেত্রে।

এরপর  সর্বশেষ সেলিং এর পার্ট এবং সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট হলো ভালোবাসা, ভালোবাসা এবং ভালোবাসা। হ্যা ক্রেতাকে ভালোবাসতে হবে।  ভালোবাসার কাজে একেবারেই বিরক্তি আসেনা এবং সময় ইনভেস্ট নিয়ে কোন চিন্তা থাকেনা যে কতটা সনয় আমি ইনভেস্ট করছি এই এক কাজে৷ হ্যা, ভালোবেসে ই এগুতে হবে। স্টীভ যে কোন কিছুতে বিরক্তি আসার পূর্বেই নিজেকে বুঝিয়ে নিতেন যে আমি তাকে ভালোবাসি, এর ফলে যা হতো তার কখনো কারো উপর বিরক্ত আসতোনা, সব ক্রেতা কে খুব সফটলি হ্যান্ডেল করতে পারতেন এবং ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সন্মান, সময় দিতে পারতেন৷ ক্রেতা ই সব, ক্রেতা বিজনেসের মূল চালিকা, এই বিষয় টা ই মাথায় গেথে নিয়ে এগুলে ভালোবাসার কমতি হয়না।

এ প্রসংগে এসে, স্টিভ তার একজন শিক্ষকের কথা বলেন, যিনি খুব বেশি ব্যস্ত ছিলেন কিন্তু তার ছেলে তাকে খুব জ্বালাচ্ছিলো৷ পরে তিনি বিরক্তির হাত থেকে বাচতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি র একটা পেজ ছিড়ে ছেলেকে দেন এবং জোড়া লাগাতে বলেন। এটি করতে দিয়ে ভাবেন যে যাক এখন কিছু সময় তার ছেলে বিজি থাকবে কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনা। ১০ মিনিটের মধ্যেই ছেলে তা জোড়া লাগিয়ে হাজির হয়ে যায়। ওর বাবা তো খুব ই অবাক হয় যে এত তাড়াতাড়ি পৃথিবী জোড়া লাগাতে পারলো তার ছেলে। পরে ছেলেটা বললো বাবা পৃথিবীর অন্যপাশে মানুষ ছিলো, আমি মানুষ টা কে জোড়া লাগিয়ে ঠিক করলাম আর অৃথিবী অটোমেটিক্যালি ঠিক হয়ে গেলো।

শুধু একটা গল্প না,  যেন একরাশ মেসেজ। পৃথিবী কে ঠিক রাখা অনেক কঠিন কিন্তু মানুষ কে ঠিক করা অনেক সহজ। যখন একপাশে মানুষ ঠিক থাকে পৃথিবী এমনিতে ই ঠিক থাকে।।  আসলে ও কিন্তু তাই।

আমরা সেল চাই, সেল চাই। এভাবে কি সেল হয়?  নাকি এটাকে মার্কেটিং বলে?

কিছুই না। আপনার ক্রেতা কে চিনুন, বুঝুন, তার কাছে যান, তাকে সময় দিন, তার সাথে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তুলুন যেন তার মনের ভাব আপনি সহজে ই বুঝতে পারেন বা তিনি আপনাকে বুঝাতে পারে,, সব সমস্যা মনোযোগ দিয়ে শুনলে ই আসবে সমাধান। হবে সেল। সর্বোপরি ভালোবাসতে হবে এই ক্রেতা সহ, নিজের কাজ কে তাহলেই সর্বোচ্চ সময় দেয়া যাবে একজন ক্রেতা কে।

সেলার হিসেবে নেন প্লিজ বা নিজেকে বিকিয়ে না ভালোবেসে নিজের অব্দি ক্রেতাকে ধরে রাখতে হবে। সেল, এমনিতে ই হবে।।।।

আমাদের নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে সবার আগে,  তাহলেই পরিবর্তন হবে আমাদের আর্থিক অবস্থা, আমাদের বিজনেস,  তৈরি হবে সেল, আসবে সফলতা।

Subscribe
Notify of
guest
2 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
Afroza Chowdhury Sima

অসাধারণ লিখেছেন আপ। অসংখ্য ধন্যবাদ।